২ গারো শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, দেড় সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বিবাহের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন দুই গারো শিশু। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও এখনও গ্রেফতার করা হয়নি কাউকেই। দ্রুত গ্রেফতার ও সঠিক বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ঢাকায় বসবাসরত গারো আদিবাসি জনগণ।  
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে “প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন” করেন ঢাকায় বসবাসরত গারো আদিবাসি জনগণ।
এসময় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, আদিবাসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, আদিবাসি ফোরামের আহ্বায়ক নিখিল মানখিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, এড. রাকেশ রেমা, এড. অটুট আরেং, এড. নিপারসন আজিম, কো-অর্ডিনেটর নক মান্দিসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন কারণে ডিসেম্বর মাস খুব আনন্দ-উৎসব ও আশির্বাদের মাস। বড়দিনসহ নানাবিধ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আমরা করে থাকি। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর রাতে নানান অনুষ্ঠান ও সংকীর্তনের মাধ্যমে বিদায় এবং পরের দিন নতুন বছরকে বরণ করে থাকি। কিন্তু গেল বছর ২৭ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ডুমনিকুড়া গ্রামে বিবাহের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দল বেঁধে ধর্ষণের শিকার হন গারো দুই শিশু শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠান থেকেই  ধর্ষণকারীরা তাদের অনুসরণ করতে থাকে। ওই এলাকার কাটাবাড়ি উজ্জলায় পৌঁছালে জোরপূর্বক দুই শিক্ষার্থীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং সাথে থাকা ১০ বছরের এক শিশু কোনক্রমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই। যা আমাদের ডিসেম্বরের পুরো আনন্দকে স্তব্ধ করে দেয়।
এ ঘটনায় তিনদিন পর অর্থাৎ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নানের ছেলে রিয়াদ(২২)সহ ১০ জনের নামে মামলা করেন ভিকটিমের পরিবার। কিন্তু দেড় সপ্তাহ পার হলেও এখনও কাউকে বিচারের আওতায় আনতে পারেনি প্রশাসন। মামলা করার পর থেকে ভিকটিমের পরিবারের উপর নানারকম ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং হত্যার হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন আসামীরা।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে আদিবাসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ধর্ষণকারী ১০ জন এতটা চৌকুশ নয় যে তারা এতদিন পালিয়ে থাকতে পারে। রাষ্ট্র চাইলে অতি দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে পারেন। তারা একটি অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছিল ছোট একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হই আর বাকি দু’জনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। 
তিনি বলেন, আজ গারোরা কোন অনুষ্ঠানে নিরাপদ নয়। যে ১০জনকে আসামী করা হয়েছে তাদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করা হোক। তাদের ছবি প্রকাশ করা হোক। শুধু গারো আর আদিবাসি নয়, সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।  যারা অপরাধ করে, ধর্ষণ করে তারা ক্রিমিনাল। তাদের কোন জাত নেই। তারা যারাই হোক তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। এছাড়া গ্রেফতারের পর যেন মুক্তি না পায় সেটিও নিশ্চিত করা হোক।
তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্র কেমন ভালো সেটি নির্ণয় হয় সে দেশের সংখ্যালঘুদের শান্তিতে বসবাসের উপর। সুতরাং রাষ্ট্র অবশ্যই এই দুই গারো শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের বিচার করে এর প্রমাণ করবে। আমরা রাষ্ট্রের কাছে আস্থা রাখতে চাই, এই ধর্ষণের বিচারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এই দেশটা সবার জন্য সুন্দর হয়ে উঠুক এটাই আমরা চাই।

2022-04-09 16:36:52

2022-04-09 06:36:52

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *