ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের অভাব আবার অনুভব করা গেল। প্রথম টেস্টে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা ৩৬৭ রানে থেমে যাওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু মাত্র ২৫ রানে ওপেনিং জুটি ভেঙে যাওয়ার পর নিয়মিত উইকেট হারানোয় ভালো অবস্থানে থেকে দিন শেষ করতে পারলো না টাইগাররা। দিন শেষে মাত্র ৯৮ রান তুলতেই বাংলাদেশের নেই ৪ উইকেট।
শুরুতেই মাত্র ৯ রান করে সাদমান ইসলামের বিদায়ের পর আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন কিন্তু নাজমুল তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারলেন না, দলের ৮০ রানের মাথায় মাত্র ৩৮ রানে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
অধিনায়ক মুমিনুল হক তো দলকে আরো বিপদে ফেলে শূন্য রানে ফিরে গেলেন। তিনি যখন ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন, তখনো দলের রান ৮০। অভিজ্ঞ মুশফিকও দিনটি শেষ করতে পারলেন না, মাত্র ৭ রান করে তিনিও মুমিনুলকে অনুসরণ করে প্যাভেলিয়নের দিকে হাঁটেন। দলের অবস্থা তখন ৯৪ রানে ৪ উইকেট।
দলের বিপদের মুখে দিন শেষে ওপেনার মাহমুদুলের সাথে যোগ দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। তাকে মূলত ‘নাইট ওয়াচম্যান’ হিসেবে নামানো হয়েছে। তবে তিনি নিজের কাজটা ঠিকঠাক মতো করতে পেরেছেন। রানের খাতা খুলতে না পারলেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে মাঠ ছেলেড়েছেন তাসকিন। আর মাহমুদুল অপরাজিত আছেন ৪৪ রানে।
শনিবার তাসকিনকে নিয়ে দিনের খেলা শুরু করবেন মাহমুদুল। তিনি কি হাফ সেঞ্চুরি করতে পারবেন নাকি হাফ সেঞ্চুরির পর তা সেঞ্চুরিতে রূপ দেবেন তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।
এর আগে ডারবান টেস্টে খালেদ আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং দাপটে ৩৬৭ রানে থেমে গেল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস।
বৃহস্পতিবার টসে জিতে প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্টের প্রথম দিনটা সে অর্থে নিজেদের করতে পারেননি টাইগাররা। ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৩৩ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
দিন শেষে অপরাজিত থাকেন টেম্বা বাভুমা (৫৩) ও কাইল ভেরিয়েন্ন (২৭)। দুজনের থিতু জয়ে যাওয়া জুটিতে বাড়ছিল বাংলাদেশের বিপদ।
তবে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে মাত্র ১২ রান যোগ করতেই জুটি ভেঙেছেন পেসার খালেদ আহমেদ। দ্বিতীয় দিনের ষষ্ঠতম ওভার করতে এসে দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন কাইল ভেরিয়েন্নেকে। ৮১ বলে ২৮ রান করা ভেরিয়েন্ন রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি।
পরের বলে আবারো খালেদের আঘাত। নতুন ব্যাটার উইয়ান মাল্ডার বুঝেই উঠতে পারেননি খালেদের বল। লাফিয়ে ওঠা বলটা খেলতে গিয়ে গালিতে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে তুলে দিয়ে বিদায় নেন রানের খাতা খোলার আগে।
গলার কাটার মতো বিঁধে থাকা টেম্বা বাভুমাকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৭ রানের আক্ষেপে পুড়ে ৯৩ রানে বিদায় নেন তিনি।
সব শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান কেশভ মহারাজ ১৯ রানে বিদায় নেন। এতে বড়ে সংগ্রহের স্বপ্নে ভাটা পড়ে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার।
৮ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রানের সংগ্রহ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষ করে প্রোটিয়ারা। লিজাড উইলিয়ামস ৬ এবং সিমন হারমার ৮ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় সেশনের খেলা করেন। তাদের আগের সেশনের অবিচ্ছেদ্য ১৬ রানের জুটি বেশি বাড়তে দেননি খালেদ আহমেদ। ১২ রানে থাকা উইলিয়ামসকে ফেরান দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। তাতে অবশ্য ফিল্ডার জয়ের অবদান আছে ঢের। এই জুটি ভাঙে ৩৪ রানে।
৩৩২ রানে ৯ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা পরে সাড়ে তিন শ’ রানের কোটা পার করে লেজের দিকের দুই ব্যাটসম্যান হারমার আর ডুয়ানে অলিভিয়ারের ব্যাটে। শেষ দিকে বাংলাদেশ দলের জন্য অস্বস্তি হয়ে ওঠা দশম উইকেটে এই জুটি থেকে আসে ৩৪ রান। পরে অলভিয়ারকে ১২ রানে ফিরিয়ে প্রোটিয়াদের ইনিংস থামান মিরাজ। ৩৬৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন হারমার।
খালেদ আহমেদ ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। তার সাথে মিরাজ ৩টি এবং এবাদত নিয়েছেন ২ উইকেট। আছে একটি রানআউটও।
2022-04-09 16:40:56
2022-04-09 06:40:56