স্হায়ী কমিটির শূন্য পদ পূরন সহ বড় চমক আসছে বিএনপিতে

আসছে আগামী প্রহলা সেপ্টেম্বর বাংলদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে,বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পরপরই যত দ্রুত সম্ভব বিএনপির স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে।

নেতাদের মৃত্যুজনিত কারণে বিএনপির স্থায়ী কমিটির চারটি পদ খালি হয়েছে। এই পদগুলো দ্রুত পূরণ করার তাগিদ অনুভব করছে বিএনপির সিনিয়র নেতারা। স্থায়ী কমিটিতে এমন কয়েকজন সদস্য রয়েছেন যারা বর্তমানে অসুস্থ।

নিয়মিত বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেন না স্হায়ী কমিটির অনেক সদস্য । স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন। ফলে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকারের মতো স্থায়ী কমিটির সদস্যরা যখন বৈঠকে আসেন না, তখন এক ধরণের কোরাম সংকট হয়। আর এই কারণেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে বিএনপির মধ্যে চলছে নানা রকম জল্পনা কল্পনা ।

বিএনপিরর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এবার স্থায়ী কমিটির যে শূন্য পদগুলো পূরণ হবে, তাতে চমক আসবে। কারা আসছেন স্থায়ী কমিটিতে এই ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে দুই ধরণের মতামত পাওয়া গেছে। এক ধরণের মতামতে বলা হচ্ছে যে, দলে যারা প্রবীণ এবং দলে এখনো অবদান রাখতে পারেন এই ধরণের নেতাদের স্থায়ী কমিটিতে আনা হবে।

চট্টগ্রামের নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি করেছে, তাদের স্থায়ী কমিটিতে নিয়ে আসার ব্যাপারে ভাবনা চিন্তা চলছে বলে একটি বিশেষ সূত্র বলছে।

আবার অন্য একটি সূত্র বিপরীত মত প্রকাশ করছেন। তারা মনে করছেন যে, বর্তমান স্থায়ী কমিটিতে যারা আছেন তারা সকলে বার্ধক্য, নানা রোগে বর্তমানে জর্জরিত এবং সংগঠনকে দেওয়ার মতো সময় তাদের নেই। তারা নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। এই রকম অবস্থায় দলের সবচেয়ে নীতিনির্ধারক এই ফোরামটিকে কার্যকর করার জন্য এমন কিছু ব্যক্তিবর্গকে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।

যারা সত্যিকার অর্থেই কাজ করবে এবং দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বর্তমান যে স্থায়ী কমিটির যে সদস্যরা আছেন তারা সকলেই প্রবীণ। কেউই দলের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে নিজেকে উৎসর্গ করার মতো অবস্থায় নেই। বরং তারা অতিথি পাখির মতো এই সেই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন।

বাকি সময় তারা নিজেদের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। বিএনপির তৃণমূলের নেতারাও বলছেন যে বিএনপিতে দরকার সা’র্বক্ষণিক নেতৃত্ব, যিনি দলের জন্য সবসময় কাজ করবেন। এক্ষেত্রে তারা উদাহরণ দিয়ে বলেন কে এম ওবায়দুর রহমান যখন বিএনপির মহাসচিব ছিলেন, তখন তিনি সারাক্ষণ দলের জন্য কাজ করতেন।

মান্নান ভূঁইয়া, সালাম তালুকদারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সেই সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সবসময় দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতেন। এখন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অতিথির পাখির মতো হয়ে গেছে। এই কারণেই যারা দলকে সময় দিতে পারবেন, তরুণ নিবেদিত প্রাণ এবং যাদের সম্ভাবনা আছে।

অন্তত ৫ থেকে ১০ বছর যারা দলকে আরো সার্ভিস দিতে পারবে এই রকম ব্যক্তিদেরকে স্থায়ী কমিটিতে আনার কথাবার্তা বিএনপিতে শোনানো হচ্ছে। বিএনপির মধ্য বয়সী নেতাদের মধ্যে রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেলের মতো অপেক্ষাকৃত তরুণদেরকে এখন নেতৃত্বে আনার সময় বলে মনে করছেন বিএনপির কেউ কেউ।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, বিএনপি সবসময় তারুণ্য নির্ভর একটি দল ছিল। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তরুণরাই দলকে বাঁ’চিয়ে রেখেছিল এবং এই তরুণদের উপর ভর করেই ’৯১ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল। এখন সেই বিএনপি প্রবীণ ক্লাবে পরিণত হয়েছে। যারা নেতৃত্বে আছেন সবাই বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন।

এজন্য স্থায়ী কমিটিতে তরুণদের জন্য জায়গা করে দেওয়া উচিত বলে বিএনপির অনেকে মনে করছেন । তবে বিএনপিতে স্থায়ী কমিটিতে কারা আসবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার সিদ্ধান্তের উপর। তবে কেউ কেউ মনে করেন খালেদা জিয়া এখন দলীয় কার্যক্রমে আগ্রহী নয় এবং এই চারজন যে তার পছন্দের কেউ হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই।

কারণ স্থায়ী কমিটির পুরো কর্তৃত্ব এখন তারেক জিয়ার হাতে। তারেক জিয়া যাদেরকে মনে করবেন তাদেরকেই স্থায়ী কমিটিতে নেবেন। তারেক জিয়াই এখন এই ধরণের কমিটি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তারেক জিয়ার পছন্দের চারজন ব্যক্তিই যে, স্থায়ী কমিটিতে আসবেন তা মোটামুটি নিশ্চিত।

2021-01-30 06:29:31 0000-00-00 00:00:00
Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *