বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণাদায়ী অস্ত্র ছিলো জয় বাংলা শ্লোগান। স্বাধীনতাকামী প্রতিটি মানুষ ভালোবেসে মন থেকেই জয়বাংলা শ্লোগানকে ধারন করেছিলো, অহংকার নিয়েই উচ্চারণ করেছিলো জয় বাংলা শ্লোগান। সেই জয় বাংলা শ্লোগান উচ্চারনের জন্য এখন আদালতের নির্দেশনার প্রয়োজন হয়ে পড়লো কেন? এটি আদালতের আ্ওতায়ই বা গেলো কিভাবে?
বশির আহমেদ নামের যে আইনজীবী জয় বাংলাকে জাতীয় শ্লোগান হিসেবে ঘোষনার জন্য আদালতে রিট করেছেন- তিনি জয় বাংলার চেতনায় মানুষকে উজ্জীবিত করতে এর আগে কি কি করেছেন? তার কি কোনো ফিরিস্তি কেউ চেয়েছে? জয় বাংলার পক্ষে তার নিজের অবদান, ভূমিকা কি- সে বিষয়ে কি আমাদের কোনো ধারনা আছে?
জয় বাংলা তো কেবল শ্লোগান নয়- একটি আদর্শ,চেতনা। এটি কেবল সভা সমাবেশে বক্তৃতা শেষে উচ্চারণের বিষয় নয়, এটি বিশ্বাসের বিষয়, বুকে ধারনের বিষয়। রিটকারী আইনজীবী কি এই বিষয়গুলো বুঝেন? তিনি কি নিজে বিশ্বাসে, চেতনায় জয় বাংলাকে লালন করেন? চর্চ্যা করেন?
’জয় বাংলা’র সৃষ্টি হয়েছিলো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়, গণ আন্দোলনের উদর থেকে। তাকে আইনি আদালতে নিয়ে যা্ওয়ার পেছনে জয় বাংলার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই, জয় বাংলাকে মানুষের অনুভববে মিশিয়ে দেয়ার আকাংখা নাই। আছে কেবল দৃষ্টি আকর্ষনের উদগ্র বাসনা,আদর্শবাদ নয়- ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির, নজরে পড়ার হীন আকাংখা।
স্বাধীনতার শ্লোগান জয় বাংলাকে নতুন করে প্রতিষ্ঠার ব্যাপার নাই, তবে চর্চ্যার ব্যাপার আছে, সেই চর্চ্যাটা অনুভব থেকে হয়, অন্তরের তাগিদ থেকে হয়। বাংলাদেশের বাস্তবতাই তো হচ্ছে- যে জিনিসকে নির্দেশ দিয়ে পালন করতে বাধ্য করা হয়, সেই জিনিস জনগনের কাছে ক্রমশ: গুরুত্বহীন হয়ে পরে। রিটকারী নিজেও নিশ্চয় বিষয়টা জানেন।