সিকদার ভাইয়েরা দেশ ছাড়তে পেরেছে আওয়ামী লীগের সহায়তায়

বাংলাদেশের প্রভাবশালী ও ধনী শিল্পগোষ্ঠীর অন্যতম সিকদার গ্রপ৷ প্রায় পাঁচশ কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব নিয়ে মতবিরোধের জেরে এক্সিম ব্যাংকের দুই পরিচালককে গুলি করে হত্যার চেষ্টা এবং নির্যাতনের অভিযোগে সিকদার গ্রপের পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে গত ১৯ মে গুলশান থানায় মামলা হয়৷ পুলিশ দুই ভাইকে খুঁজছে বলে জানিয়েছিল৷ এই নিয়ে হইচইয়ের মধ্যেই গত ২৫ মে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রন ও দিপুর ব্যাংকক যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান৷ 

বিএনপির ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, অবশ্যই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সিকদার গ্রপের সম্পর্ক আছে৷ আওয়ামী লীগের সহায়তা না পেলে সিকদার ভাইয়েরা দেশ ছাড়তে পারতেন না৷ এই করোনাকালে যখন সব বন্ধ, এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে কীভাবে তারা বিমানবন্দর ব্যবহার করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে উড়ে চলে গেলেন?

সিকদার গ্রুপের যিনি মূল মালিকের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক ছিল৷ বড় শিল্পগ্রপ হওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ও নানা ব্যবস্থাপনায় তাদের অবদানও আছে৷ কিন্তু তার দুই পুত্র কী করেছেন, তাদের ব্যাংক কী করেছে সেটা অনেক গভীর আলোচনার বিষয়৷ পুত্রের দায় পিতার উপর বা পরিবারের উপর চাপানো কি ঠিক হবে? এই আলোচনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ইউনাইটেড হাসপাতালের চরম অবহেলায় তাদের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে অগ্নিকাণ্ড এবং বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নানা কথা উঠে আসে৷

ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার বলছে, দুই ভাই মুমূর্ষু রোগী হিসেবে ব্যাংকক গেছেন৷ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটিকে থাইল্যান্ডে অবতরনের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে গত ২৩ মে সেখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দেয় থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস৷ ওই দিনই অনুমোদন দেয়া হলে ঢাকায় থাই দূতাবাসে একটি চিঠি দিয়ে দুই জনকে মেডিকেল ভিসা দেয়ার অনুরোধ করা হয়৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিফ অব প্রোটোকল আমানুল হক বলেন, বিশেষ ফ্লাইটের বিষয়ে আমাদের কাছে কাগজপত্র আসে৷ আমরা তা দেখে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেই৷ করোনার মধ্যে বিশেষ ফ্লাইটে বিদেশিরা যাচ্ছেন৷ কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কাগজপত্র আমাদের কাছে আসার কথা নয়৷ এটা সিভিল অ্যাভিয়েশন দেখে৷

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমানও বলেন, ইমারজেন্সি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগে না৷ এটা সিভিল অ্যাভিয়েশনই দেখে ৷ আমরা দ্রুত অনুমোদন দিয়ে দিই৷

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শুক্রবার বিকেলে ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত অ্যাডিশনাল এসপি বলেন, ২৫ মে ওই দুই ভাই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশের বাইরে গেছেন কিনা সে তথ্য আমাদের পক্ষে এভাবে জানানো সম্ভব নয়৷ আপনাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চের মাধ্যমে লিখিত আবেদন করতে হবে৷

রন হক সিকদার এবং তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম৷ তিনি জানান, আমি শুনেছি তারা দেশের বাইরে চলে গেছেন৷ কিন্তু কোনো সত্যতা পাইনি৷ ইমিগ্রেশনের কাছে জানতে চেয়েছি৷ তারাও এখনো তাদের দেশত্যাগের ব্যপারে কোনো তথ্য দেয়নি৷ তাদের দেশত্যাগে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তো বিমান চলাচল বন্ধ৷ তাই আমরা কোনো নিষেধাজ্ঞা দেইনি৷ তিনি দাবি করেন, আমরা তাদের গ্রেপ্তারের জন্য খুঁজছি৷

2021-01-30 06:29:31 0000-00-00 00:00:00
Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *