শেরে-বাংলা’র ৬০ তম মৃত্যুবার্ষিকী ও রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা

আজ এই দিনে ২৭ এপ্রিল ১৯৬২ সালে ৫৪ এর যুক্ত ফ্রন্টের প্রাণ পুরুষ শেরে-বাংলা এ কে এম ফজলুল হক আমাদের ছেড়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন।
তাকে স্বরণে রেখে পরবর্তী রাজনৈতিক সংক্ষিপ্ত দৃশ্যপট।
বাংলা’র বাঘ শেরে-বাংলা এ কে এম ফজলুল হক এর নেতৃত্বে যুক্ত ফ্রন্ট পাকিস্তান মুসলিম লীগের মসনদের ভীত কম্পনের মধ্যে দিয়ে তৈরি হয় নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ। বাংলা’র কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় কৃষক প্রজা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জমিদারদের হাত থেকে কৃষি জমি ফিরিয়ে এনে কৃষকদের দিয়েছেন তিনিই। সে সময় শ্লোগান উঠেছিল “লাঙ্গল যার জমি তার”।
১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইল এর “কামগামী সম্মেলন'” -এ মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের ইঙ্গিত পূর্ণ বক্তব্য পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী-কে আসসালামু আলাইকুম জানিয়ে ছিলেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী’র সামরিক বাহিনীর পূর্ব পাকিস্তানে নিরীহ জনগণের ওপর ঘুমন্ত নগরীতে রাতের অন্ধকারে ঝাপিয়ে পড়ে।
পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্ট-এর মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা’র মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান অথাৎ স্বাধীন বাংলাদেশ উচ্চারণ তার কণ্ঠস্বর থেকে উচ্চারিত হয়েছিল যা আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা’র ঘোষণায় রুপায়িত হয়।
১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর স্বাধীন বাংলাদেশ-কে রক্ষায় মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান আবারও জনসম্মুখে এগিয়ে আসলেন।
দেশবাসীর উদ্দেশ্য আহবান জানিয়েছেন আপনারা শান্ত হোন, নিজ-নিজ কাজে মনযোগি হোন, সামরিক বাহিনী আপনাদের পাশে আছে, দেশে ইনশাআল্লাহ শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
দেশকে স্ব-নির্ভর করে গড়ে তুলতে সকল শ্রেণী পেশা এবং নানান পথ ও মতের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে সক্রিয় হয়ে অতি অল্প সময়ে মাত্র সাড়ে চার বছরের মাথায় সোনার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়ি’র কলঙ্ক গুছিয়ে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র পূর্ণ প্রর্বতনের মধ্যে দিয়ে সাফল্য অর্জন করেছেন।
শেরে-বাংলা’র কৃষক প্রজা আন্দোলনের শ্লোগান “লাঙ্গল যার জমি তার” এর মাধ্যমে যতটুকু কৃষকের ভাগ্য উন্নয়ন হয়েছিল তার পরবর্তী অধ্যায়ের সুচনা হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান-এর কৃষকের ঘাম ঝরানো সোনালী ফলসের সবুজ বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে। তিনি শ্লোগান দিলেন এক গুণ থেকে দুইগুণ ফলস উৎপাদনে ধাপে-ধাপে তিনগুণ ফসল উৎপাদন করবো।
আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে ঘোষণা করলেন ১৯ দফা কর্মসূচী-
বিশ্ব দরবারে জাতি রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকতে জাতি স্বত্বার পরিচয়ে পরিচিত করলেন “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ”।
“আধুনিক স্ব-নির্ভর” ও “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ”
হাজার বছর ধারণ করে নিয়ে যেতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের জন্য রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছেন “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি” যার ছায়া তলে আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ। এই দলকে সারা বাংলাদেশে সু-সংগঠিত করে ঘরে ঘরে নিয়ে গিয়েছেন প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের মাতা, বিএনপি চেয়ারপার্সন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। 
তার নেতৃত্বে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে একাধিকবার সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন নানান চড়াই-উতরাই পার করে। বর্তমানে দলে হাল ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র সুযোগ্য উত্তরসূরী দেশদরদী, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 
দলের লক্ষ কোটি নেতাকর্মী সমর্থকদের অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস তার নেতৃত্বে আগামীর কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে উঠবে বিংশ শতাব্দী’র সুখী সম্বৃদ্ধির বাংলাদেশ। 
শায়রুল কবির খান
সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী। 

2022-04-26 19:31:55

2022-04-26 19:31:55

Published
Categorized as 60

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *