সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও দুর্বৃত্তায়নের ধারাবাহিক পরিণতিই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক স্থবিরতার প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এজন্য সবার আগে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। তাহলেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য নির্বাচিত সরকার আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নৈতিক ও যৌক্তিক ভূমিকায় এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুরু থেকেই জনবিচ্ছিন্ন এই অনির্বাচিত সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি রাখাইনে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সরকার রাখাইনে ফেরত পাঠাতে পারেনি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাও তারা প্রমাণ করতে পারেনি। দীর্ঘদিনের এই সমস্যাকে কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিকীকরণ করতে না পারা নিঃসন্দেহে সরকারের চরম ব্যর্থতা। ফলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, মুহূর্তে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিগুলোর ‘না’ উপেক্ষা করে বঙ্গোপসাগরের মুখে নুতন সৃষ্ট ভাসানচর দ্বীপে রোহিঙ্গাদের একাংশকে স্থানান্তরের ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দাবি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে আমরা অবগত হয়েছি যে, গত ৩রা ডিসেম্বর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে থেকে ১৬৪২ জনের একটি দলকে কক্সবাজার থেকে নূতন প্রতিষ্ঠিত ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের একক সমস্যা নয়। এ সমস্যা একটি বৈশ্বিক সমস্যা।
জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার এ সংকট নিরসনে সমান দায়িত্ব রয়েছে। সকলের সাথে সমন্বয় না করে সম্পূর্ণ এককভাবে বাংলাদেশ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু করে সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে নাখোশ করেছে। এটি রোহিঙ্গা শরণার্থী সমাধানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ব্যর্থতার একটি নূতন সংযোজন।
2021-01-30 06:29:31
0000-00-00 00:00:00