ভুটানের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই করল বাংলাদেশ

দুই দেশের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রবিবার প্রথমবারের মতো ভুটানের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই করছে বাংলাদেশ। পিটিএতে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের পক্ষে ভুটানের ইকোনমিক এফেয়ার্স মিনিস্টার লোকনাথ শর্মা স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং থিম্পু থেকে ভার্চ্যুয়াল সংযোগের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেকোনো দেশের সাথে প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি করল বাংলাদেশ।

ভুটান বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম স্বীকৃতি প্রদান করে। স্বীকৃতিদানের পর থেকে সুদীর্ঘ ৫০ বছর যাবত দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এদিন ভুটানের সাথে পিটিএ স্বাক্ষর করা হলো।

এদিকে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, আগামী দিনে বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন দেশের সাথে পিটিএ বা এফটিএ স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আরও ১১ দেশের সাথে আলোচনা চলছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ফলে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বর্তমানে প্রাপ্ত বাংলাদেশের কিছু বাণিজ্য সুবিধা লোপ পাবে।

চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর থেকে বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে শিশুদের পোশাক, পুরুষদের ট্রাউজার, জ্যাকেট, ব্লেজার, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ঘড়ি, ফ্যান, আলু, গুঁড়ো দুধ, সিমেন্ট, ব্রাশ, পার্টিকেল বোড, কমলা, পেয়ারা ও আনারসের শরবতসহ মোট ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে।

অন্যদিকে ভুটান বাংলাদেশে কমল, আপেল, আদা, ফলের শরবত, দুধ, কাঠের ফার্নিচারসহ মোট ৩৪ পণ্যে এ সুবিধা পাবে। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে আরও পণ্য দুদেশের তালিকায় সংযুক্ত করা হবে। এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় পিটিএ-এফটিএ স্বাক্ষরের যাত্রা শুরু হলো।

বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোট বাণিজ্য ছিল ১২.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তখন বাংলাদেশ ০.৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি ও একই সময়ে আমদানি করে ১২.১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

দুদেশের বাণিজ্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। এ সময়ে বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৭.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে ভুটান থেকে আমদানি হয় ৪৯.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

2021-01-30 06:29:31

0000-00-00 00:00:00

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *