রোহিঙ্গাদের জন্য শতভাগ প্রস্তুত ভাসানচর। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নিশ্চিত করা হয়েছে, আধুনিক জীবনযাপনের সব রকম সুযোগ-সুবিধা।গত ১৭৬ বছরের সাইক্লোনের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে ভাসানচরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৯ ফুটের সুদৃঢ় বাঁধ ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম ওই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়কেও।
এখন এখানে রোদ ঝলমলে দিন অপেক্ষায় নতুন বাসিন্দাদের। দুই কিলোমিটারের বেশি পাইলিং মা’থা উঁচু করে জানান দিচ্ছে, সমুদ্র শাসনে সদা জাগ্রত। তীর প্রতিরক্ষা বাহিনীতে আরো আছে গ্রাভেল-জিও ব্যাগ।
যদি ঝড় হয়, জলোচ্ছাস আসে, তবুও সাগরের বুকে অটল অটুট থাকবে ১৩ হাজার একরের ভাসানচর। ১৮৪২ সাল থেকে ২০১৮, যাচাই করা হয়েছে ১৭৬ বছরে যত সাইক্লোন হয়েছে তার সবগুলো। নির্মাণ করা হয়েছে ৯ ফুট উঁচু বাধ। উচ্চতা বাড়বে আরো ১০ ফুট। যদিও এখানকার পুরানো বাসিন্দারা বলছেন, প্রকৃতির রুদ্রুরুপের দেখা কখনো পাননি।
৪২ কিলোমিটারের সড়ক পৌছে গেছে আশ্রয়ণ এলাকার প্রত্যেকটি কোণে। ঘরগুলো তৈরি হয়েছে জাতিসংঘের শরণার্তী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর’র বিধান মেনে। নিশ্চিত করা হয়েছে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ৩ দশমির ৯ বর্গমিটার জায়গা।
চার সদস্যের জন্য একেকটি ঘর, ১৬টি ঘর নিয়ে একেকটি বাড়ি। আর ১২টি বাড়ি নিয়ে একেকটি পাড়া বা ক্লাস্টার। এমন ক্লাস্টারের সংখ্যা ১২০টি। আর প্রত্যেক ক্লাস্টারের জন্য একটি করে সাইক্লোন শেল্টার। যা অবলীলায় সামলাতে পারবে ২৬০ কিলোমিটার গতির ঝড়।
২০ শয্যার দুটি হাসপাতালে থাকবে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার। কমিউনিটি ক্লিনিক আছে চারটি। দুটি চারতলা স্কুল, এতিমখানা, ডে কেয়ার সেন্টার, মাল্টি পারপাস সুপারশপ, বাজার -আধুনিক জীবন ব্যবস্থার সবকিছুই ঠিকঠাক প্রস্তুত ভাসান চরে।
প্রকল্প পরিচালক কমোডর আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে স্কুলিং বা ইনফরমাল লারনিং সেন্টার যেগুলো আছে সেগুলো খুবই সীমিত আকারে হয়েছে। এখানে পর্যান্ত জায়গা আছে যদি প্রয়োজন হয় ভবিষ্যতে আরো স্কুল করা যাবে।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সঙ্গে ভাসানচরের তুলনা করলে দেখা যায়, ক্যাম্পে একটি টয়লেট ভাগাভাগি করতে হচ্ছে ২০ জনকে। আর এখানে ১১ জনকে। কুতুপালং আর উখিয়ায় যেখানে ৮০ জনের জন্য একটি গোসলখানা, সেখানে ভাসানচরে প্রতি ১৬ জনে একটি বাথরুম।
রোহিঙ্গা শিবিরের বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুতবিহীন, সেখানে ডিজেল জেনারেটর আর সৌরবিদ্যুতে আলোকিত হবে গোটা ভাসানচর।
2021-01-30 06:29:31
0000-00-00 00:00:00