বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ ডিসেম্বর আয়োজিত হওয়ায় এবার অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল বিজয় দিবসের ভাবনা। শুরুতেই অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন শাকিল চৌধুরী।

বুয়েট পরিবার গত বছরে যাদেরকে হারিয়েছে তাদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালনের পর শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রম। এরপর মঞ্চে আসেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি তানভীর আহমেদ তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক পারভেজ এহসান।

দু’বছরের বিভিন্ন কার্যক্রমের সার-সংক্ষেপ তুলে ধরেন বক্তারা। পারভেজ এহসান বলেন, কোরোনাকালে যেভাবে আমরা একজন বুয়েটিয়ান অন্য একজন বুয়েটিয়ানদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেটাই ছিল অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া প্রতিষ্ঠার মূলনীতি। তাই আজকে আমরা গর্বিত বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে।

তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়া করোনাকালে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়াও তিনি বিশেষভাবে বুয়েটিয়ান মারুফ আহমেদ এবং তাবাসসুম মেহজাবিনের কথা উল্লেখ করেন যারা এই কঠিন সময়ে খাবার রান্না করে বিভিন্ন বুয়েটিয়ানের বাসায় বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলেন অকৃপণভাবে।

তানভীর আহমেদ বলেন, আমরা এই কঠিন সময়েও বেশ কিছু ওয়ার্কশপ করতে পেরেছি বুয়েটিয়ানদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। আর বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইট ডিজাইনের জন্য তিনি আন্তিরক ধন্যবাদ জানান আরেক বুয়েটিয়ান ফেরদৌস আহমেদকে।

এরপর মঞ্চে আসেন ফেরদৌস আহমেদ। তিনি বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটের খুঁটিনাটি আমন্ত্রিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে তুলকে ধরেন এবং বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদা রুনুর ক্লিকে সেটা সক্রিয় করা হয়। সার্বিক সহযোগিতার জন্য ফেরদৌস আহমেদ এবং তার সহধর্মিণী মো. মাসুম জাহানকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

এরপর মঞ্চে আসেন নির্বাচন কমিশনার বুয়েটিয়ান ফজলুল হোক এবং শাহিনুল ইসলাম প্লাবন। নির্বাচন কমিশনার দু’জন নতুন কমিটির সদস্যদের একে একে নাম ঘোষণা করে তাদেরকে মঞ্চে আসতে বলেন। এরপর বিদায়ী কমিটির সবাইকেও মঞ্চে আসার আহ্বান জানানো হয়।

সবাই মঞ্চে আসার পর বিদায়ী কমিটির সভাপতি নতুন গঠিত কমিটির সভাপতি সানিয়া শারমিনের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। তারপর শুভেচ্ছা বক্তব্যে নতুন কমিটির সভাপতি সানিয়া শারমিন এবং সাধারণ সম্পাদক সৌমেন চক্রবর্তী বিদায়ী কমিটিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং বুয়েট অ্যালামনাই অস্ট্রেলিয়ার কার্যক্রমকে আরো বিকশিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এরপর বিজয় দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন মাহমুদা রুনু। বক্তব্যের শেষে বিজয় দিবসের প্রতিপাদ্যকে বিষয়বস্তু করে আরেক বুয়েটিয়ান হানির বানানো কেক কাটেন বুয়েটিয়ানদের পরবর্তি প্রজন্ম। মঞ্চে যখন এই শিশুরা হাতে লাল সবুজ পতাকা নিয়ে হাজির হলো তখন সেখানে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়।

আসলেই বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বে গর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে তাইতো প্রশান্ত পাড়ের দেশ অস্ট্রেলিয়াতেও আমি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম জানে লাল সবুজ মানেই বাংলাদেশ। এরপর খুঁজে নেয়া হয় সবচেয়ে নবীন এবং ব্যাচের সদস্যকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছে ২০০৭ ব্যাচের একজন এবং ১৯৭৭ ব্যাচের একজন।

উপস্থাপক শাকিল চৌধুরী বলেন, এটাই বুয়েট অ্যালামনাইয়ের গর্ব যে তারা নানা এবং নাতির বয়সী বুয়েটিয়ানকে একই ছাতার তলে আনতে পেরেছে। এরপর এই দু’জন নবীন এবং প্রবীণ বুয়েটিয়ান তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

মঞ্চে আহ্বান করা হয় অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাদেশের কন্সুলেট জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম নিজেই একজন বুয়েটিয়ান। তিনি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ অবদানের জন্য বুয়েটিয়ানদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বুয়েটিয়ান এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম বিভিন্ন পরিবেশনা দিয়ে আমন্ত্রিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন। গান পরিবেশন করেন বুয়েটিয়ানদের পরবর্তী প্রজন্ম ফারহিন আহমেদ এবং ফারহিন জুনাইরা ছাড়াও বুয়েটিয়ান নিশাত সিদ্দিক এবং বুয়েটিয়ান তানভীর আহমেদের সহধর্মিণী তামিমা শাহরিন।

নাচ পরিবেশন করেন পরবর্তী প্রজন্ম মাওয়াহিব রহমান রোদশি। এরপর দেয়া হয় বিরতি। বিরতির পর মঞ্চে আসেন সিডনির বিখ্যাত ব্যান্ডদল মাঁচা। তারা তাদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত। কোভিডের বাধ্যবাধকতার জন্য এবার দর্শক সংখ্যা সীমিত রাখা হয়। আর পুরো অনুষ্ঠানের ছবি তোলার দায়িত্বে ছিলেন তুমন আহসান ফোরগ্রাফী।

2021-03-04 07:34:08

2021-03-03 20:34:08

Published
Categorized as 16

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *