বিজেপির আসল প্রতিদ্বন্দ্বী ইত্তেহাদুল মুসলিমিন

সম্প্রতি বিহারের এক জনসভায় বক্তব্য রাখছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির একটি বড় সাফল্য হলো ভারতীয় মুসলমানদেরকে দূরে ঠেলে দেয়া। গত ছয় বছরে যে বার্তাটি দেয়া হয়েছে তাতে মুসলমানদেরকে সম্ভাব্য ভোট ব্যাংক হওয়ার ধারণা দেয়া হয়নি। ‍মুসলিম ভোটারদের জন্য কথা বলা শুধু সাম্প্রদায়িক হিসেবেই চিত্রিত করা হয়নি, একে দেশ-বিরোধী রাজনীতির সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া তিনটি আইনের বিরুদ্ধে সারা দেশে প্রবল বিক্ষোভ দেখা দিলেও শুধু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিতে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিরোধিতাকারীদেরকেই দেশ-বিরোধী আখ্যা দেয়া হচ্ছে। ধন্যবাদ জানাতে হয়, কৃষকদের সর্বব্যাপী আন্দোলনকে কেউ দেশ-বিরোধী বলার সাহস পায়নি।

জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলী ও নীতি মনযোগ থেকে মুসলমানদের দূরে সরিয়ে দেয়ার নীতিটিই এখন রাজনৈতিক নতুন ভারতের কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কংগ্রেসের মধ্যেও এখন এই প্রবণতা দানা বেঁধেছে এ কারণে যে দলটিকে হিন্দু-বিরোধী ও মুসলিম-পন্থী হিসেবে দেখানোর কৌশল নিয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা।

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সব কা সাথ, সব কা বিকাশ বা সবার সাথে আছি ও সবার বিশ্বাস অর্জন করেছি বলে যে শ্লোগান দেয় তাতেই বুঝা যায় ভারতীয় মুসলমানদের বিশ্বাস করা যায় না। বিষয়টি এখন আর নির্বাচনে সীমাবদ্ধ নেই মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের অধিকারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আর এই ধারণা বিজেপিকে বিপুল নির্বাচনী সাফল্য এনে দিচ্ছে, যদিও ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ৬৩% জনগণই ক্ষমতাসীন দলটির বিপক্ষে ভোট দেয়।

দেশ ভাগের পর থেকে ভারতীয় মুসলমানরা যেসব দলের সঙ্গে ভাগ্য জড়িয়েছে সেগুলোর একটিও মুসলিম নেতৃত্বাধিন ছিলো না। কিন্তু এই ধারণার বিপদ গত ছয় বছরে মুসলমানরা ভালোভাবে বুঝেছে। মুসলমানরা বুঝেছে যে সবচেয়ে সেক্যুলার দলটিও মুসলমানদের পক্ষে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করে।

আর, অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-কে কেউ একেবাক্যে সাম্প্রদায়িক দল বলে বাতিল করে দিতে না পারায়, একেই এখন ভারতীয় মুসলমানদের দল হিসেবে তারা বেছে নিচ্ছে।

যে রাজ্যে এআইএমআইএম-এর উত্থান সেখানে মুসলমানদের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু ওয়াইসির নেতৃত্বাধিন এআইএমআইএম-কে এখন একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

দলটি শুধু মুসলমানদের পক্ষেই নয়, ভারতের সব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলছে। সেটা দেখা গেছে সাম্প্রতিক বিহারের নির্বাচনে। সেখানে দলটি বেশ কয়েকজন অমুসলিমকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় এবং নির্বাচনে বেশ কয়েকটি আসনে জয়ী হয়।

2021-03-07 00:50:21

2021-03-06 13:50:21

Published
Categorized as 18

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *