এনজিওতে চাকরি ও বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণ মামলায় নলছিটি থানা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাচ্চুকে (৪৫) জেলহাজতে পাঠিয়েছে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১।
উচ্চ আদালতের দেয়া সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ আত্মসমার্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক রাশেদ কবির নামঞ্জুর করে চেয়ারম্যান বাচ্চুকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চুর অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ঝালকাঠি ও নলছিটির সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনসহ সর্বমহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানী খিলগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষক চেয়ারম্যান বাচ্চু ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার তরুণী (১৯) নিজে মামলাটি করেন।
কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই এলাকার দরিদ্র কৃষকের সন্তান নির্যাতিত তরুণী পরিবারসহ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে বসবাস করেন। লোখাপড়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করেন তিনি। প্রায় ৭ থেকে ৮ মাস আগে আক্তারুজ্জামান বাচ্চু তার ইমুতে ফোন করেন। বিভিন্ন কথার একপর্যায়ে তার নিজের একটি বড় এনজিও রয়েছে জানান। তিনি চাইলে একই ইউনিয়নের মেয়ে হিসেবে তাকে একটা ভালো চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাগজপত্র গুছিয়ে রাখতেও বলেন।
চেয়ারম্যান বাচ্চুর কথা অনুযায়ী তিনি কাগজপত্র নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ বিকেলে ঢাকার গুলিস্তানে দেখা করলে হেড অফিসে নেয়ার কথা বলে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে দক্ষিণ বনশ্রী ৯/২ নাম্বার রোডের ব্লক-ই, বাসা নং-১২৩ (পারোয়ারী বাড়ি) নিয়ে যান। সেখানে অবস্থানরত মোর্সেদা বেগম নামে এক নারীর সহায়তায় চেয়ারম্যান বাচ্চু তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ও ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। কোনো বাড়াবাড়ি করলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন। তিনি ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন।
পরে গত ৬ জানুয়ারি নারী লোভী চেয়ারম্যান বাচ্চু ফোন করে পুনরায় ওই বাসায় আসতে বলে অন্যথায় ওই দিনই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবেন বলে ভয় দেখালে নিরুপায় হয়ে ওই বাসায় গেলে সেখানে আটকে সারারাত নির্যাতন করে ৭ জানুয়ারি সকালে সেখান থেকে একই হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন।
দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণের কয়েক দিন পর নির্যাতিতা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি চেয়ারম্যান বাচ্চুকে জানানোর পর তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গর্ভপাত করান।
এরপর থেকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে তিনি নানারকম ছলচাতুরী শুরু করে পুনরায় তাকে ওই বাসায় দেখা করার জন্য বাধ্য করেন। তরুণী পরিবারের কাছে পুরো ঘটনা জানিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানী খিলগাঁও থানায় আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ও সহযোগী মোর্শেদা বেগমের (৩৫) বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-২২/১১২) করেন।
2022-04-09 16:26:52
2022-04-09 06:26:52