বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া

মহামারি সংকটের মধ্যেই ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হলো৷ ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ এবং ভবিষ্যত পথ পরিক্রমা’ শিরোনামে উপস্থাপন করা এ বাজেট গরিব মারার বাজেট, যা আদৌও বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মত সাধারণ মানুষের৷

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়েছে, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়৷ এ বাস্তবতায় দেশের আর্থিক ক্ষতি সারানো এবং মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের জন্য পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল৷

এবারের বাজেটে মোবাইল কল রেটে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে৷ বরাবরের মত তামাকজাত ও বিলাস পণ্যের দাম বাড়ছে৷ ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ আগে বার্ষিক আয় আড়াই লাখের উপরে হলে কর দিতে হতো, এবার সেটা তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷

অর্থনীতিকে সচল রাখতে বাজারে অর্থ প্রবাহ প্রয়োজন৷ এই যুক্তিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ ধুকতে থাকা পুঁজিবাজারেও ‘কালো টাকা সাদা করার’ সুযোগ থাকছে৷

তবে সাধারণ মানুষ বাজেট নিয়ে একদমই খুশি নয়৷ নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন মন্তব্যে সে ক্ষোভ উঠে আসছে৷

আলআমিন নামে একজন লেখেন, ‘‘গাঁজাখুরি বাজেট, আদৌও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়৷’’

আব্দুস সাত্তার নামে আরেকজন লেখেন, ‘‘আমি বাজেট পড়ে কনফিউজড! করোনার কারণে অস্বাভাবিক অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে যাচ্ছে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশ৷ সেক্ষেত্রে এত বিপুল পরিমান ঘাটতি টাকা কোথা থেকে আসবে? এটা অসম্ভব! তার চাইতে বাজেট ছোট আকারে হলেই তা বাস্তবায়ন সহজ হতো৷ দেশের মান-সম্মানও রক্ষা পেত৷’’

সাইফুল ইসলাম নামে একজনের মন্তব্য, ‘‘এত এত টাকা বাজেট কিন্তু আমাদের মৌলিক অধিকার, সেবাগুলোই পাচ্ছি না৷ মানুষ এখন চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সমস্যা, তাহলে এত টাকার বাজেট করে লাভ কি? এই টাকা কোথায় যায়? বজেটের সব টাকাই কি পদ্মাসেতুতে গেলো নাকি, সুইস ব্যাংকে গেলো?’’

নতুন বাজেটে প্রস্তাবিত ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৩.২৪ শতাংশ বেশি৷ টাকায় ওই অংক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৭.০৯ শতাংশের সমান৷

এই ব্যয় মেটাতে এবং করোনায় থমকে যাওয়া অর্থনীতি সচল করতে বাজারে বাড়তি মুদ্রাপ্রবাহ হবে৷ ফলে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফ্রীতির ঝুঁকি আরো বাড়বে৷ এ অবস্থায় সরকার আশা করছে তারা মূল্যস্ফ্রীতি ৫.৪ শতাংশে বেঁধে রাখতে পারবে৷

যদিও সাধারণ মানুষ তেমনটা মনে করছেন না৷ সোহানুর রহমান সোহান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘‘বাস্তব সম্মত বাজেট করা হোক৷ এরকম উচ্চাভিলাষী বাজেট বাংলাদেশে বাস্তবায়ন অসম্ভব৷’’

‘‘এত ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাত অনেকটা নড়বড়ে হয়ে যাবে না?’’ প্রশ্ন ছোড়েন মুহাম্মদ শহিদ খান নামে আরেক দর্শক৷

আসিফ জাকারিয়া নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘খরচ যদি বেড়েই যায় আয়ও বাড়াতেই হবে৷’’

প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি অনুপাতে স্বাস্থ্যখাতে (১.২ শতাংশ) বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে৷ তবে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে জিডিপি অনুপাতে বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় সামান্য কমছে৷ কমছে কর্পোরেট করহার৷ পোশাক শিল্পে কর ছাড়ের মেয়াদও বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে৷

এসএনএল/কেএম

2021-03-04 07:00:50 0000-00-00 00:00:00
Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *