বাংলাদেশের মানুষও এটা মনে রাখবে – চারু হক

বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯৫ ভাগই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। যে বন্দর এমনিতেই অনেক কাল ধরে কন্টেইনার হেন্ডেলিং, ওয়্যারহাউজসহ নানাবিধ অবকাঠামোর অভাব, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির স্বল্পতা, পণ্য পরীক্ষায় অহেতুক সময়ক্ষেপণ ও স্বেচ্ছাচারিতা, ঐতিহ্য অনুসারে প্রতি ধাপে সংশ্লিষ্ট কর্মচারি- শিপিং এজেন্ট ও সরকার দলীয় শ্রমিক নেতাদের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাসহ নানাবিধ কারণে সক্ষমতার প্রশ্নে নিচের সারিতে। এবং এতসব দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতার বিপরীতে এতবেশি নির্ভরতা বজায় রাখা এই বন্দরটিই শুধু নয়, এর সাথে মংলা বন্দরকেও বলা যায় তুলে দেয়া হয়েছে ভারতের হাতে। এমনকি ভারতের ভার নিতে হাজার কোটি টাকা খরচও করা হয়েছে এ বন্দরে…
বিশ্বের কোথাও কোনো দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয় না কখনও সেরকম চুক্তিই করা হয়েছে এই দুটি বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে। যার অন্যতম ফিচারঃ পারাপার করা ভারতীয় পণ্যে ট্রানজিট শুল্ক আরোপ করা হবে না, এমনকি ভারতীয় পণ্যের আগে বাংলাদেশী পণ্যের জাহাজ ভিড়বে না, ভারতীয় পণ্যের আগে যে দেশের বন্দর সে দেশের পণ্য খালাস হবে না। অন্যদিকে যদিও অজস্রবার আবেদন সত্ত্বেও ভারত তার ভূমি ব্যবহার করে অন্যদেশে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহন করতে দিচ্ছে না, সীমান্তে বাংলাদেশীদের নির্বিচারে হত্যা, এবং মাদক ও মানবপাচার বন্ধ করছে না। এমনকি প্রাকৃতিক ও আন্তর্জাতিক অধিকারের পানি পর্যন্ত দিচ্ছে না।
কিন্তু কথা হচ্ছে, কিছুই না পেয়ে সবকিছু তুলে দেয়ার এই ব্যবস্থা নিয়ে এখন কেন দেশের মানুষকে এত উত্তেজিত দেখা যাচ্ছে, যেহেতু এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা কোনটাই নতুন না। ভোটারবিহীন ২০১৪ এর নির্বাচনের পরে ২০১৫ সালে ভারতের পিএম বাংলাদেশ সফরে এসেই এসব নিয়ে সমঝোতা চুক্তি করে গেছে। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের পিএম ভারতে গিয়ে এই চুক্তি পাকাপোক্ত করে এসেছে। চুক্তি সম্পন্ন করে এসে এদেশের মানুষকে এমন কথাও বলা হয়েছে ‘ভারতে যা দিয়েছি, সারা জীবন মনে রাখবে’। এবং যা বলা হয়নি, কিন্তু সবাই জানে, বাংলাদেশের মানুষও এটা মনে রাখবে।

2021-01-30 06:29:31

0000-00-00 00:00:00

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *