প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বীকার করি না,তার অধীনেই নির্বাচন করি

ঢাকা ১৮ উপ-নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের যৌক্তিকতা, প্রার্থীর নমিনেশন পাওয়ার জন্য পেশী শক্তির ব্যবহার, দলের তৃণমূল সহজ সরল সাপোর্টারদের মিথ্যা আশ্বাস আর দলের সিনিয়র নেতাদের নিশ্চুপ কারণ?

আমি, আপনি আপনারা সবাই জানেন নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তারপরও নির্বাচনে অংশ গ্রহন।

নির্বাচনের মাঠে ঐ সব নেতাকর্মী কই যারা সাহসীকতার সাথে নমিনেশন প্রাপ্তির সহযোগিতা করেছেন ও জয়ী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রচারের অতি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

প্রার্থী নিজেই জানেন ফলাফল কি হবে।
তার প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে তা হল যেভাবেই হোক প্রার্থী হতে পারলে ভবিষ্যতের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়ার সূযোগ।
তিনি সবকিছুই জানেন তারপরও কর্মীদের মিথ্যা আশ্বাস ভরসা দিয়েছেন মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য।

সত্যিকারের বুদ্ধিমান নেতাকর্মীদের সবাই জানেন নির্বাচনের ফলাফল কি হবে তাই তারপরও তারা নির্বাচনের প্রচারে প্রার্থীর কাছাকাছি ছিলেন, সেল্ফী তুলে আপলোড করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন এবং নির্বাচনের খরচ বাবদ কমবেশি নগদ নারায়ণ বুছে নিয়েছেন এবং নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছেন। এদের কারোর দোষ দেওয়ার সূযোগ নেই বরং এরাই সঠিক।
এদের জানা আছে ফলাফল কি হবে আর কোন ঝামেলার পড়লে কেউ খবর নিবে না এবং নির্বাচনের পরবর্তী ঝামেলার মোকাবিলা নিজেদের করতে হবে দল বা প্রার্থীর খোঁজ পাওয়া যাবে না।

বিএনপির সিনিয়র নেতারা যারা নামে মাত্র প্রভাবশালী তথা নীতিনির্ধারনী কমিটির সদস্য তারাও জানেন ফলাফল কি হবে তারপরও নিশ্চুপ কারণ তারা জানেন মতামতের কোন মূল্য নেই শুধূ শুধু সত্যিকারের বক্তব্য দিয়ে এই শেষ বয়সে অপমানিত হওয়ার কোন দরকার নেই। এত বছর দলের জন্য জীবন যৌবন উজাড় করে দল ও দেশের জন্য শ্রম দিয়ে শেষ বয়সে অপমানিত হয়ে বিএনপি থেকে বিদায় ও বেঈমান আখ্যায়িত হওয়ার কোন সূযোগ নেই। এরা এখন সন্মানের সাথেই দল ও জীবন থেকে বিদায়ের দিন গুনছেন।
এরাও সঠিক পথেই

কারণ অতীতে এই ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার চোখের সামনেই ভাসে।
শহীদ জিয়ার পরবর্তী যারা জীবন বাজী রেখে ,স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা দলকে পুনর্গঠনের অসাধারণ সাহসীকতার এগিয়ে দলকে একটা ভিতের উপর দাড় করিয়াছিলেন এবং দল রক্ষার স্বার্থে শহীদ জিয়ার বিধবা স্ত্রী শোকাহত বেগম খালেদা জিয়া কে অনেক অনুরোধ করে দলের নেতৃত্বের সামনে দাঁড় করিয়াছিলেন, তারা কি কেউ দলে আছেন?
না তাদের বেশিরভাগই দলে টিকে থাকতে পারেন নাই। তাদের সিস্টেম করে বেঈমান, দলবিরোধী দালাল আখ্যায়িত করে দল থেকেই বিতাড়িত করেছে অথবা অপমানিত হয়ে দল থেকেই চলে গেলেন।

দলের নেতা এখন কারা ?
যারা boss always right
স্বাধীন মতামত দেওয়ার সাহস ও যোগ্যতা কোনটাই নেই। তারা অভিজ্ঞ এবং এক অর্থে যোগ্য তারা জানেন কথা বলে সন্মান নষ্ট করার কোন মানে নেই বরং বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসাবে সমাজে বাস করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তাইতো ইতিহাসের ছাত্র মাত্রই জানেন দলের ধ্বংস প্রচেষ্টার নায়করাই আজ বিএনপির নেতা
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ
মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান
আরও অনেক। ইচ্ছে করলে এর উপর একটা পরিপূর্ণ PHD থিসিস করা যায়।

ওয়ান ইলেভেন এর যারা অকথ্য ভাষার ব্যবহার করে দলের ও জিয়া পরিবারের ওপেন গালিগালাজ করেছেন তারাও এখন স্ব গৌরভে ফিরে এসেই বিএনপির প্রভাবশালী নেতা।
আসলেই আমাদের লজ্জাও আমার বাবা-মা কে যারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তাদের সাথে সৌজন্যমুলক কথা বলাই কষ্টকর, সেখানে নেতৃত্বের পদে বসানোর প্রশ্নই উঠে।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যিনি বা যারা নমিনেশন বা নির্বাচন করার পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভুমিকায় আছেন তারা কি জানেন না ?
এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণের কি লাভ?
আপনি কি মনে করেন?

তারাও সব জানেন
সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুমিকা রাখা দালাল তোষামোদকারীদের কাছে তো দলের স্বার্থের কোন ব্যাপার নেই, নিজের ব্যাক্তিগত স্বার্থ ও দালালীর স্বার্থ রক্ষাই মূখ্য ।

সবচেয়ে বড় কথা আমি যতই জানি তার অর্থ এই নয় যে আমি সব বিষয়ে পারদর্শী মহাজ্ঞানী । আল্লাহ একমাত্র মহাজ্ঞানী।মানুষের জ্ঞানের ক্ষেত্রে অবশ্যই সীমাবদ্ধতা আছে । এইজন্য একদল বিশ্বস্ত তোষামোদকারী নয়, বর্তমান বিশ্বের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী একদল বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা বিশেষ প্রয়োজন যা বিএনপির নেতৃত্বের আশেপাশের আছে কি না সন্দেহ।

তারা সব জানেন কিন্ত ভুল সিদ্ধান্ত নিতে নিতে এবং নিজেদের বেশী জ্ঞানী ভেবে সব হারিয়ে এখন অসহায়!
তাই এখন জেনে শুনেই বিষ পানে বাধ্য।

ফাইজলামি একটা সীমা আছে যাকে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বীকার করি না, তার অধীনেই নির্বাচন করি এবং নির্বাচনে অনিয়মের জন্য তার কাছেই নালিশ করতে যাই।

মাসুদ শরফুদ্দীন
ঢাকা, বাংলাদেশ।

2021-01-30 06:29:31

0000-00-00 00:00:00

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *