নেপালের হুমলা জেলায় অনুপ্রবেশ করে চীন সেখানে ভবন নির্মাণ করেছে বলে নেপালের কিছু ব্যক্তি যে অভিযোগ করেছেন, সেই ভূখণ্ড আসলে চীনা ভূখণ্ডের মধ্যে পড়েছে। এটা আসলে দক্ষিণপশ্চিম চীনের তিব্বত স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের বুরাং কাউন্টিতে নতুন গড়ে তোলা গ্রামের অংশ।
বুরাং কাউন্টের পররাষ্ট্র সম্পর্ক দফতরের ডিরেক্টর, বাচি, বলেন যে, মে মাসে ভবন নির্মাণের আগে সামরিক বাহিনী এবং জরিপ ও মানচিত্র তৈরির সাথে জড়িত স্থানীয় পেশাদারদের নিয়ে ব্যাপকভাবে মাঠ পর্যায়ে মাপজোঁখ করা হয়েছে যাতে নির্মিতব্য ভবন চীনা ভূখণ্ডের মধ্যে পড়ে।
বাচি বলেন, এই গ্রাম পুরোপুরি চীনা ভূখণ্ডের মধ্যে পড়েছে, এবং এর সবচেয়ে কাছের ভবনটিও চীন-নেপাল সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তিনি আরও বলেন যে, নতুন গ্রামের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
বাচি বলেন, নেপালের কিছু ব্যক্তি প্রশ্ন তোলার পর জরিপের সাথে জড়িত পেশাদার ব্যক্তিরা দ্বিতীয়বারের মতো মাঠপর্যায়ে জরিপ চালিয়েছে, এবং তারা নিশ্চিত করেছে যে, সবগুলো ভবনই বুরাং কাউন্টির মধ্যে পড়েছে।
তিনি বলেন, সীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য এই গ্রাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এবং ভবনগুলো নির্মাণকালীন সময়ে নেপালের সীমান্ত সেনাদের সাথে কোন রকমের সঙ্ঘাত বা বিবাদ হয়নি।
নেপালের স্থানীয় বিরোধী দলের গঠিত একটি পর্যবেক্ষণ টিমের বরাত দিয়ে কিছু মিডিয়া জানিয়েছে যে, নেপালের ভূখণ্ডের দুই কিলোমিটার ভেতরে ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে এবং এটা করতে গিয়ে ১২ নং পিলার অতিক্রম করা হয়েছে। তবে, বাস্তবে নতুন গ্রামটি নির্মাণ করা হয়েছে ১১ আর ১২ নং পিলারের মাঝামাঝি।
১১ আর ১২ নং পিলারের অবস্থান অনেক উঁচুতে এবং দুটোর মাঝখানে ব্যবধান অনেক। পার্বত্য এলাকায় সীমান্ত নির্ধারণের নিয়ম মেনে সেখানে সীমান্ত রেখা টানা হয়। সে কারণে অপেশাদার জরিপকারীদের জন্য সেখানে ভুল করাটা খুবই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, এটার সম্ভাবনা রয়েছে যে, নেপালের জরিপ টিম প্রযুক্তিগত ভুল করেছে। তিনি বলেন, চীন আর নেপাল সরকার চলতি বছরে তিনবার যৌথ সীমান্ত পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে এবং কোন সমস্যা সেখানে পাওয়া যায়নি।
চীন আর নেপালের মধ্যকার সীমান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হয়ে আছে, এবং দুই দেশের মধ্যে ভূখণ্ডগত কোন বিবাদ নেই।
এর আগে নেপালি মিডিয়া জানিয়েছিল যে, নেপালের চীনা দূতাবাস বলেছে যে, স্থানীয় মিডিয়াগুলো যে সব ভবনের কথা বলেছে, সেগুলো চীনা ভূখণ্ডের মধ্যে পড়েছে এবং নেপালকে তারা সেটা যাচাইয়ের আহ্বান জানান। নেপালের কর্তৃপক্ষও সে সময় জানায় যে, চীন নেপালের কোন ভূখণ্ড দখল করেনি।
তবে ভারতের কিছু মিডিয়া বিষয়টি অতিরঞ্জিত করে নেপালিদেরকে উসকে দেয়ার চেষ্টা করে। এমনকি কিছু ভারতীয় মিডিয়া এমনকি এটার সাথে চীন-ভারতের সীমান্ত বিবাদকেও মেলানোর চেষ্টা করে। তারা বলে যে, ভারতের সাথে সীমান্তে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার জন্য চীন নেপাল সীমান্তে এই আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে।
2021-05-04 20:25:43
0000-00-00 00:00:00