দুর্নীতির বীজ মহিরুহ হয়ে গেছে, আজ প্রবাসী রেমিটেন্স যুদ্ধারাও ধুকে ধুকে মরছে

টানা এক যুগের শাসনের পর দূর্ণীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্সের নীতি গ্রহণ করেছিলেন। দুর্নীতির বীজ গত একযুগে দেশে যেভাবে রোপন করা হয়েছে এই বীজ কি জিরো টলারেন্সে উপরে ফেলা সম্ভব?

দুর্নীতি এখন রাস্ট্রের উপর লেভেল থেকে একদম দলের কর্মী পর্যন্ত মহামারী রুপ ধারন করেছে। এমন অবস্থায় জিরো টলারেন্স নীতি দিয়ে কি দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন করা সম্ভব কি না জানি না তবে প্রধানমন্ত্রী একবার নিজেই বলেছিলেন বর্তমান সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দলের সবাইকে কিনা যায়। উনার আশেপাশে যারা উনার গুনকির্তন করছেন, সময়ে সময়ে উনার বাবার জন্য যারা মায়া কান্না করে নাকের পানি চোখের পানি এক করে ফেলে, বিভিন্নভাবে পায়ে তেল মোর্দন করে এই সকল দলদাসদের কি দেশপ্রেমিক বা দলপ্রেমিক বলে গন্য করা সম্ভব? আসলে এরা কেউই দেশপ্রেমিক বা দলপ্রেমিক কোনটাই না বরং দলানুদাস বলা যেথে পারে।

অথচ এদের মধ্য থেকে অনেককে ধরে এনে প্রধানমন্ত্রীই তাদের বিনা ভোটে এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছেন। এখন তাদের প্রধান কাজ হলো লুটপাঠ, চুরি, ব্যাংক-ডাকাতি থেকে অবশেষে করোনা টেস্ট রিপোর্টেও ডাকাতি।

এই করোনা মহামারীর মুহুর্তে স্বাস্হ্য মন্ত্রনালয় যেভাবে মুখথুবড়ে পড়েছে শুধু বুক উচু করে দাড়িয়ে দুর্নীতিবাজরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়কে ঘিরে এমন দূর্ণীতি আগে ছিল না। এখন দলের লুটেরা নিরোলস দুর্নীতি করে যাচ্ছে শুধু টাকা কামিয়ে বিদেশে পাচারের জন্য। গরিবের চাল থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের প্রাণোদনার টাকা সঠিক ভাবে বন্টন করতে পেরেছে? পারে নাই বা করে নাই। কেন করে নাই? কারন তাদের কোন জবাবদিহীতা নাই।

প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের একজন মন্ত্রী স্বাস্হ্যমন্ত্রী! এমন একজন ব্যাক্তির হাতে স্বাস্হ্য মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা নাই। প্রশ্ন হলো জাহিদ মালিক তাহলে কিসের ভিত্তিতে এতবড় একটা মন্ত্রনালয়ের দ্বায়িত্ব পেলেন? শুধুমাত্র দলীয় দাসের কারণে না অন্যকিছু?

এখন সারা পৃথিবীতে চলছে করোনা নিয়ন্ত্রণের যুদ্ধ। এই করোনা যুদ্ধে আমাদের লাখো প্রবাসীদের জীবন জীবিকার বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন দেশ থেকে যেসব প্রবাসী ভাইবোনেরা দেশে যায় পরিবারের আপনজনদের সাথে সময় দিতে, তারাই যখন ফিরেন, নিয়ম অনুযায়ী নিজ দেশ থেকে করোনার একটি সনদ সঙ্গে আনতে হয়, যাতে উল্লেখ থাকে করোনা নেগেটিভ। আর টাকার বিনিময়ে চলছিলো ভূয়া সনদ সাথে অনেক ভুগান্তি।

ইতিমধ্যে ইটালী, জাপান, অষ্ট্রেলীয়া আমাদের ভূয়া করোনা টেস্টের সনদ নিয়ে নিউজ করেছে। সম্প্রতি ইটালিতে ১৬৭ জন প্রবাসীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে, এমনকি তাদেরকে প্লেইন থেকে নামতেই দেয়া হয়নি। ইতালির গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ভূয়া সনদের নিউজ একদম হেডলাইন করেছে তাও প্রায় প্রতিটা নিউজে। এতে করে বিদেশের মাটিতে আমাদের বাংলাদেশের মানসম্মান শুধু নস্টই হয়নি, পাশাপাশি আমাদের প্রবাসীদের উপার্জিত বিদেশি মুদ্রায় ক্ষতির কারন হিসাবে গন্য হয়েছে। এর দায়ভার কে নিবে? ভুয়া করোনা সনদ বিক্রেতারা আজো আইনের আওতায় আনা হলো না দুইজন ছাড়া! যারা ভূয়া সনদ বিক্রির সাথে জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা জরুরি।

আরেকটি বিষয়, আমাদের প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিদেশগমন পুর্বে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণের একটি টেকসই নীতিমালা প্রনয়ণ করতে পারলে অনেক গুন বেশি রেমিট্যান্স আহরন করা সম্ভব।

মোস্তাফা হাসান
মালয়েশীয়া

2021-01-30 06:29:31

0000-00-00 00:00:00

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *