ভারতে কৃষি সংস্কার প্রস্তাবের প্রতিবাদে বিক্ষোভরত কৃষকরা পুলিশের লাঠি আর কাঁদানে গ্যাসের মধ্য দিয়ে ঢুকে পড়েছে দিল্লি প্রাণকেন্দ্রে এবং ঐতিহাসিক লাল কেল্লায় উড়িয়ে দিয়েছে শিখ ধর্মের প্রতীক খালসা পতাকা।
এনিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে এবং এতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে হাজার হাজার কৃষক পায়ে হেটে এবং ট্রাক্টর চালিয়ে শহরে প্রবেশ করে। কয়েকটি জায়গায় কৃষকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলে এবং তাদের জন্য নির্ধারিত রুটে না গিয়ে অন্য দিকে এগিয়ে যায়।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের নতুন বাজার বান্ধব সংস্কারের বিরুদ্ধে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ এই কৃষক আন্দোলন চলছে প্রায় দুই মাস ধরে। সরকার প্রস্তাবিত আইনটি আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে কিন্তু কৃষকরা বলছে তারা আইনটির বাতিল চায়।
কয়েক দফা আলোচনার পর পুলিশ মঙ্গলবারের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিলো এই শর্তে যে তারা কোনোভাবেই প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের বিঘ্ন ঘটাবে না।
দিল্লির ছয়টি প্রবেশপথ থেকে কর্মসূচি শুরুর কথা ছিলো কৃষকদের। পুলিশ এর সবগুলোই অবরোধ করে রেখে কর্মসূচি পালনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রুট ঠিক করে দেয়।
কিন্তু সিংঘু, টিকরি ও গাজিপুর -এই তিনটি জায়গায় কৃষকরা ব্যারিকেড ভেঙ্গে, পায়ে হেঁটে ও ট্রাক্টরে করে মিছিল শুরু করে।
এক পর্যায়ে একদল কৃষক মুঘল শাসকদের তৈরি লাল কেল্লা কমপ্লেক্সে পৌঁছে যায় এবং স্তম্ভ বেয়ে উঠে খালসা পতাকা উড়িয়ে দেয়। তবে ভারতের জাতীয় পতাকাটিতে তারা হাত দেয়নি বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে।
সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক জরুরি বৈঠকে বসেছেন বলে স্থানীয় সংবাদমদ্যমগুলো খবর দিচ্ছে। যে আইন নিয়ে কৃষকরা এতো বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাতে কৃষিকে উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থার আওতায় নেয়া হয়েছে আর এটিই কৃষকদের ক্ষুব্ধ করেছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তার বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সংস্কারের পক্ষে।
মোদীকে অবশ্যই এই কালো আইন ফিরিয়ে নিতে হবে, গাজিপুর সীমান্তে একজন কৃষক বলছিলেন বিবিসিকে। সরকার প্রস্তাবিত আইনটি আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে কিন্তু কৃষকরা বলছে তারা আইনটির বাতিল চায়। এর আগে দিল্লির সীমান্তে প্রায় দু মাস অবস্থান ধর্মঘট করেছিল কৃষকরা।
ধারণা করা হচ্ছে দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান চলায় পুলিশের সাথে কৃষকদের আরও সংঘর্ষ হতে পারে। বার্ষিক প্যারেডে সশস্ত্র বাহিনী তাদের সর্বশেষ যুদ্ধ উপকরণ প্রদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্য তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে। তবে করোনা মহামারির কারণে এবারের আয়োজনকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
2021-05-04 19:47:52
2021-01-26 15:11:12