ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা নিয়ে চীনের সন্দেহ

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান যোগাযোগে সন্দেহ পোষণ করছে চীন। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সুস্পষ্ট অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার চীনবিরোধী প্রচারণায় বাংলাদেশকেও টানার চেষ্টা করছে।

চীনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চীনের রাষ্ট্রদূত ওই অভিযোগ করেন। গ্লোবাল টাইমস সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে।

চীনের রাষ্ট্রদূতের দাবি, দেশটির দ্রুত ও শান্তিপূর্ণ অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিতে পারছে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে শীতল যুদ্ধকালীন মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত এমন এক সময় ওই অভিযোগ করেছেন যখন যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা বর্তমান দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের মূল কারণ হলো তারা চীনের শান্তিপূর্ণ ও দ্রুত অগগ্রতি মেনে নিতে পারে না। চীনের উন্নয়নপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে কিছু রাজনীতিক (যুক্তরাষ্ট্রের) শীতল যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে অন্য দেশকে চীনবিরোধী শিবিরে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকারের সূত্র ধরে গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাম্প্রতিক যোগাযোগের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ জুন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক অ্যাসপার গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবেই তাদের সঙ্গে বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করতে বলেছে। এ মাসের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি স্টিফেন বিগান বাংলাদেশ সফর করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এসব বৈঠক থেকে অত্যন্ত স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্র তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রদূতের এই সাক্ষাৎকার ঢাকায় কূটনৈতিক মহলেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকারি সূত্রগুলো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে যে বাংলাদেশের নীতিগত অবস্থান হলো সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা এবং কারো বিশেষ বলয়ে না যাওয়া।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি কালের কণ্ঠকে বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথাই হলো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সবার সুসম্পর্ক ও বন্ধুত্ব রয়েছে। ওই দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। কিন্তু এর প্রভাব বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে পড়েনি।

2021-01-30 06:29:31

0000-00-00 00:00:00

Published
Categorized as 17

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *