জেলেনস্কিকে ধরতে কিয়েভে পৌঁছেছিল রুশ বাহিনী

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রুশ বাহিনী কিয়েভ পৌঁছে যায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হত্যা কিংবা আটক করার জন্য। 
কিয়েভে প্রেসিডেন্ট ভবনে সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বর্ণনা করেছেন রাশিয়ান সেনারা কীভাবে তাকে ও তার পরিবারকে যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনেই প্রায় ধরে ফেলেছিল। যদিও প্রথম কয়েক ঘণ্টার স্মৃতি অনেকটাই ‘খণ্ডিত’, তারপরও ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরের আগের মুহূর্তটি তার স্পষ্ট মনে আছে। 
বোমাবর্ষণ শুরুর পর জেলেনস্কি ও তার স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কি তাদের ১৭ বছর বয়সী মেয়ে ও ৯ বছর বয়সী ছেলেকে বাড়ি থেকে পালানোর প্রস্তুতি নিতে বলেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা তাদের ঘুম থেকে উঠতে বললাম। তখন সেখানে খুবই তীব্র শব্দ হচ্ছিল। বিস্ফোরণ ঘটেছিল।’ 
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী তখন জেলেনস্কিকে জানায়, রাশিয়ার স্ট্রাইক টিম তাকে হত্যা অথবা আটক করতেই বিমান থেকে কিয়েভে নেমেছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ অ্যান্ডরি ইয়ারমাক টাইমকে বলেন, ‘ওই রাতের আগে এ ধরনের ঘটনা কেবল আমরা সিনেমাতেই দেখেছি।’ 
আক্রমণের প্রথম দিন রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সরকারি কোয়ার্টারের চারপাশে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক শুস্টার লিখেছেন, ‘ভবনের নিরাপত্তারক্ষীরা ভেতরের বাতি বন্ধ করে দেন এবং জেলেনস্কি ও তার ডজনখানেক সাহায্যকারীর জন্য বুলেটপ্রুফ ভেস্ট ও অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে আসেন।’ 
মাত্র যে কয়জন সেনা কর্মকর্তা এ ধরনের অস্ত্র চালাতে পারতেন, তাদের একজন ওলেস্কি আরেস্তোভিচ। ইউক্রেন সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর এই কর্মকর্তা ওই পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ওই সময় বাড়িটি পাগলাগারদে পরিণত হয়েছিল। সবাই ছিলেন অস্ত্রসজ্জিত।’ রাশিয়ার সেনারা দুবার প্রেসিডেন্ট ভবনের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। জেলেনস্কির পরিবার তখনো ভেতরেই ছিল। 
এত কিছুর পরও পরের রাতে আরও সুরক্ষিত পরিবেশের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন জেলেনস্কি। যে প্রস্তাবের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে সরিয়ে নিয়ে নির্বাসিত সরকার গঠন করা। তবে জেলেনস্কি এসব কিছুই শোনেননি। তিনি সোজা উঠে বাইরের আঙিনায় গিয়ে নিজের ফোনে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেন, যা এখন খ্যাতি পেয়েছে।

2022-04-29 04:50:31

2022-04-29 04:50:31

Published
Categorized as 18

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *