বিলুপ্তির দিকে চলে যাচ্ছে বনে-বাঁদাড়ের অযত্নে জন্মে থাকা গ্রাম বাংলার বুনো ওষুধি ফলসা (Phalsa)। একসময় বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ফলসা গাছ দেখা গেলেও ইদানীং ফলসা বেশ দুর্লভ হয়ে উঠেছে। অনেকে হয়তো এই ফলটির নামও শুনেন নি যদিও বাংলা সাহিত্যে, কবিতায় ফলসার কথা এসেছে বারেবার। বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, ইংরেজি সহ পৃথীবির বহু ভাষাতে এটি ফলসা নামেই পরিচিত।
শহরাঞ্চলে ফলসা গাছ খুঁজে পাওয়া অনেকটা সৌভাগ্যের ব্যাপার যদিও ছাদবাগান, ছাদকৃষির বদৌলতে সৌখিন কেউ কেউ গাছ সংগ্রহ করছেন। ফলসা গাছ খুব সহজে জন্মে, পাখিরা ফল খেয়ে বীজ ছড়িয়ে দিতো চারিপাশে আর সেখান থেকে নতুন গাছ হতো।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ফল ফলসা এখন অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশী কমুনিটির বাসাবাড়ির বাকিয়ার্ড গার্ডেনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সম্প্রতি মেলবোর্নে ফলসা রোপন করে সফলতা পাওয়া গেছে। তবে যারা সিডনি, ব্রিসবেনে বা ডারউইন থাকেন তারা খুব সহজেই সফলতা পাবেন কারণ ফলসা গাছ ট্রপিকাল বা সাব-ট্রপিকাল আবহাওয়াতে ভালো জন্মে। আনন্দের বিষয় হলো, যারা ফ্লাট বাড়িতে বা বাড়ির পরিধিতে স্বল্প জায়গা তারা একে পটে রোপন করতে পারবেন।
উদ্ভিদ ক্লাসিফিকেশনে ফলসা হলো স্রাব বা গাছ, এটি ৫ থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। ঝোপের মাঝে রোমশ খসখসে গাঢ় সবুজ পাতা, দাঁতানো কিনারা দেখে ফলসা গাছ চেনা যায়। এর আরেকটি বিশিষ্ট হলো এঁরা শীত মৌসুমে পাতা হলুদ হয়ে ঝরে যায় অর্থাৎ ডেসিডুয়াস। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এরা জন্মে।
ফলসার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এককথায় সুপারফুড। হৃদরোগ প্রতিরোধ, রক্ত বিশুদ্ধকরন, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করা, বিষন্নতা ও অনিদ্রা দূর, অ্যাকজিমা নিয়ন্ত্রন এবং ক্যান্সারের বিরূদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে।
কোথায় পাবেন ফলসা গাছ? অস্ট্রেলিয়ার ট্রপিকাল বা সাব-ট্রপিকাল আবহাওয়াতে ভালো জন্মে কাজেই এই গাছ আপনার কাছের নার্সারিতে না পেলেও দূরের কোনো নার্সারি থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। এই দেশের পোষ্টাল সিস্টেমের উপর পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ
সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার,
ভিক্টোরিয়ান ফরেস্ট মনিটরিং প্রোগ্রাম ও আলোকচিত্র শিল্পী ট্রাভেল ব্লগার – TravellersTravelPhotobook এবং অস্ট্রেলিয়ান ঘুরুঞ্চি
2021-03-14 04:08:23
2021-03-13 17:08:23