ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আমেরিকার নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার পরামর্শ দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগেই রেকর্ড করা এনবিসি নিউজের সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘আমেরিকার নাগরিকদের এখনই (ইউক্রেন) ছেড়ে চলে আসা উচিত’।
স্নায়ু যুদ্ধের পর থেকে ইউক্রেন নিয়ে ওয়াশিংটন এবং মস্কোর মধ্যে উত্তেজনা একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইউক্রেন সীমান্তের কাছে প্রায় ১৩০,০০০ সেনা জমায়েত করেছে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, ‘লাইভ ফায়ার ড্রিলস’-এর জন্য (সামরিক মহড়া) ‘বন্ধু’ দেশ বেলারুশে ট্যাঙ্ক নিয়ে গিয়েছে মস্কো। পাঠানো হয়েছে একজোড়া পারমাণবিক বোমারু বিমান।
রাশিয়ার সেই ‘লাইভ ফায়ার ড্রিলস’-এর কয়েক ঘণ্টা পরই বাইডেনের যে সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে, তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বের অন্যতম বড় সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করছি। এটা অত্যন্ত আলাদা পরিস্থিতি এবং দ্রুত পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে’।
তবে বাইডেন জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও পরিস্থিতিতেই ইউক্রেনে সেনাবাহিনী পাঠাবেন না তিনি। সেটা যদি রাশিয়ার আক্রমণের পর সে দেশে বসবাসকারী আমেরিকানদের উদ্ধারের জন্যও দরকার হয়, তাও নয়। তার কথায়, ‘আমরা সেনা পাঠালে সেটা বিশ্বযুদ্ধ হয়ে যাবে। যদি আমেরিকান এবং রাশিয়ানরা একে অপরকে গুলি ছুড়তে শুরু করে, তবে আমরা এক ভিন্ন পৃথিবী দেখব’।
ওদিকে, ‘লাইভ ফায়ার ড্রিলস’-এর পর ন্যাটোর পক্ষ থেকেও রাশিয়াকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ন্যাটো জানিয়েছে, রাশিয়া যেভাবে ক্ষেপণাস্ত্র, অস্ত্রশস্ত্র এবং মেশিন গান থাকা জওয়ানদের মোতায়েন করছে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের তিন দশক পরে ইউরোপের জন্য ‘বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি তৈরি করছে। সেই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ এড়াতে তৎপরতা শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলোও।
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া প্রায় দেড় লাখ সেনা পাঠানোর পর শুরু হয়েছে আর এক ‘স্নায়ু যুদ্ধ’। প্রথমে আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষ এই পরিস্থিতি মিটিয়ে ফেলার কথা বললেও রুশ সেনা বাহিনী এখনও পিছু না হঠায় হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। অন্য দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানাচ্ছেন, ইউক্রেন আক্রমণের কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। তা হলে এত সেনা টহল কেন? এ প্রশ্নের অবশ্য পরিষ্কার উত্তর দেননি তিনি। ফলত, ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলোর মধ্যে নতুন স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
2022-04-09 16:36:17
2022-04-09 06:36:17